সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানোর ৫টি কৌশল

আপনি কি প্রতিদিন সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা শুনে ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন? “কেন আমার সন্তান কথা শুনছে না?” বা “সন্তান যখন রেগে যায়, তখন কী করা উচিত?”—এ ধরনের প্রশ্ন অনেক বাবা-মার মনকে ক্লান্ত করে। যখন সন্তান কথা শুনছে না বা বারবার অভদ্রভাবে জবাব দিচ্ছে, তখন নিজেকে শান্ত রাখা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এই সময়টাতেই অভিভাবক হিসেবে নিজের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এই ফিচারে আপনারা জানবেন কীভাবে মাত্র ৫টি কৌশলে শান্তি বজায় রেখেই সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানো যায়।

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল

১. নিজে শান্ত থাকুন

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তায় আপনার ভেতরের রাগ জেগে ওঠাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঠিক তখনই যদি আপনি শান্ত থাকেন, তাহলে সে শিখবে—উত্তেজনা বা বেয়াদবি কোনো সমস্যার সমাধান নয়।

  • চুপচাপ দশ সেকেন্ডের জন্য শ্বাস নিন
  • প্রয়োজনে একটু সময় নিয়ে নিন নিজের জন্য
  • আপনার প্রতিক্রিয়া দেখে সন্তান ধীরে ধীরে শিখবে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়।

২. ঘরে সহজ নিয়ম গড়ে তুলুন

শিশুরা নির্দিষ্ট সীমা না জানলে সহজেই বিভ্রান্ত হয়। “আমরা ভদ্রভাবে কথা বলি”, “রেগে গেলেও গালাগালি করি না”—এ ধরনের নিয়ম ছোট বাক্যে বোঝান।

  • নিয়মগুলো ঝগড়ার সময় নয়, শান্ত অবস্থায় আলাপ করে ঠিক করুন
  • সঙ্গে জানিয়ে দিন, নিয়ম মানা না হলে কী ফলাফল হবে।
    যেমন—খেলার সময় কমে যাবে, অথবা স্ক্রিন টাইম হ্রাস পাবে।এভাবে শিশু শৃঙ্খলার গুরুত্ব শিখবে ।

৩. মনোযোগ দিয়ে শুনুন

অনেক সময় সন্তান অভিমান বা কষ্ট থেকে বাজে আচরণ করে।
এসময় আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন—“তুমি রেগে গেছো নাকি? কী হয়েছে?”—সে বুঝবে আপনি তার পাশে আছেন।
বলুন, “আমি শুনব, কিন্তু ভদ্রভাবে বলো।”
এভাবে কথা বললে তার মধ্যে নিরাপত্তা ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে।

৪. ভালো আচরণে প্রশংসা করুন

শুধু সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তার জন্য শাস্তি নয়, বরং যখনই সন্তান সুন্দরভাবে কথা বলবে বা নিয়ম মানবে, তখনই প্রশংসা করুন। মাঝে মাঝে ছোট পুরস্কার দিন। এতে তারা বুঝবে—ভালো ব্যবহারের ফলাফল ভালো হয়।

৫. ধারাবাহিক হোন, ধৈর্য ধরুন

শিশুর আচরণ একদিনে বদলায় না। তাই নিয়ম মানলে যেমন প্রশংসা করবেন, না মানলে সেই একই নিয়মে শান্তভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।
শিশু যেন বিভ্রান্ত না হয়ে যায়। ধৈর্য ধরুন, বারবার মনে করিয়ে দিন এবং উন্নতির জন্য উৎসাহ দিন। আর যদি দেখেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তবে চাইল্ড সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না।

সন্তান যখন অভদ্রভাবে কথা বলে, তখন তা শুধু আপনার ধৈর্যের পরীক্ষাই নয়, বরং একটি শেখানোর সুযোগও। আপনি যদি ধৈর্য ধরে নিয়মিত সাড়া দেন, তাহলে ধীরে ধীরে সে শিখে যাবে—কীভাবে সম্মান দেখাতে হয়, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়।
আপনার ভালোবাসা, ধৈর্য আর দৃঢ় অবস্থানই একদিন তাকে করে তুলবে একজন দায়িত্বশীল মানুষ।

ছবি- সাটারস্টক

The post সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানোর ৫টি কৌশল appeared first on Shajgoj.

Post a Comment

Previous Post Next Post