ত্বক ও চুলের যত্নে অনেক কিছু করলেও হাত-পায়ের যত্নে আমরা অনেকেই বেশ অবহেলা করি, যার ফলস্বরূপ দেখা যায়, হাত পায়ের স্কিন ড্রাই ও রাফ হয়ে গেছে, চামড়া ফেটে গেছে কিংবা সান ট্যান পড়ে গেছে। সঠিকভাবে যত্ন নিলে এ সমস্যাগুলো থেকে দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়। আজকের ফিচারে থাকছে হাত পায়ের যত্ন নেওয়ার সঠিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

প্রতিদিন হাত পায়ের যত্ন নিতে যা করবেন

সাধারণত বডি কেয়ারের বেসিক স্টেপ মাত্র দু’টো, ক্লেনজিং ও ময়েশ্চারাইজিং।

ক্লেনজিং

আমাদের স্কিনের pH লেভেল ৫.৪-৫.৫ এর মধ্যে হয়ে থাকে। যদি কোনো সাবান বা শাওয়ার জেলের pH লেভেল অনেক বেশি হয়, তাহলে তা স্কিনকে ড্রাই করে দিতে পারে। তাই হাত পায়ের যত্ন নিতে pH ব্যালেন্সড সোপ বা শাওয়ার জেলের সাহায্যে ভালোভাবে হাত পায়ের স্কিন ও নেইলস দুই তিন দিন পর পর ক্লিন করুন। যাদের অতিরিক্ত ঘাম হয়, তারা চাইলে প্রতিদিন এ কাজটি করতে পারেন। এক্ষেত্রে সফট লুফা বা মাইক্রোফাইবার টাওয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

বডি কেয়ারে এক্সফোলিয়েশন তো মাস্ট

অনেকেই ঘাড়, আন্ডারআর্ম, হাতের কনুই কিংবা হাঁটুতে থাকা কালো দাগ নিয়ে বেশ ইনসিকিউরড ফিল করেন। যদি এই এরিয়াগুলো একটু ইভেন টোনড করতে চান, তাহলে আপনারা ব্রাইটেনিং ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমনঃ ভিটামিন সি বা আলফা আরবিউটিন রয়েছে এমন শাওয়ার জেল ইউজ করতে পারেন, প্রতি সপ্তাহে একবার গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা কোনো কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরের সাহায্যে বডি এক্সফোলিয়েট করতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজিং

শাওয়ারের পর পর হাল্কা ভেজা শরীরে একটি ময়েশ্চারাইজিং বডি লোশন ব্যবহার করুন। এতে করে দীর্ঘ সময় লোশন শরীরে থাকবে এবং স্কিনে ড্রাইনেস ফিল হবে না। তবে যাদের অতিরিক্ত পা ফাটার সমস্যা রয়েছে, তারা রাতে ঘুমানোর আগে পুরু করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে রাখতে পারেন। এছাড়াও হাত পায়ের স্কিন ভালো রাখার জন্য বডি হাইড্রেটেড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন ২-৩ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন।

আরেকটি টিপস দেই। বডিকেয়ারের পাশাপাশি পায়ের স্কিন ভালো রাখতে ভালো কোয়ালিটির জুতাতে ইনভেস্ট করার চেষ্টা করুন, এতে করে পায়ের স্কিন আরো ভালো থাকবে।

আনওয়ান্টেড হেয়ার রিমুভাল

বডি কেয়ারের একটি অ্যাসেনশিয়াল পার্ট হলো শরীরের অবাঞ্চিত লোম রিমুভ করা। অনেকের কাছ থেকে এই ধরনের প্রশ্ন পেয়ে থাকি, ‘রেজর ব্যবহার করলে করলে কি হেয়ার গ্রোথ আরও বেড়ে যায়?’ ‘ওয়্যাক্সিং করা কি আসলেই নিরাপদ?’ ‘ বার বার শেভিং করলে কি লোম পুরু হয়ে যায়?’ এমন অনেক কনফিউশন আমাদের মধ্যে এখনও আছে। চলুন এই বিষয়গুলো নিয়ে এবার জানা যাক। আনওয়ান্টেড বডি হেয়ার রিমুভ করার সবচেয়ে পরিচিত দু’টো প্রসেস হচ্ছে- শেভিং ও ওয়্যাক্সিং। শরীরের অবাঞ্ছিত লোম রিমুভ করার জন্য আপনি কোন প্রসেসটি ফলো করবেন, সেটা আপনার পারসোনাল চয়েজ।তবে এই টিপসগুলো জেনে রাখুন-

১) ওয়্যাক্সিং এর ২/৩ দিন আগে স্কিন এক্সফোলিয়েট করে নিন।

২) ওয়্যাক্সিং এর দিন স্কিন প্রোপারলি ময়েশ্চারাইজড করতে ভুলবেন না! স্কিন ভালোমতো হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড থাকলে ওয়্যাক্সিং প্রসেস ইজি হয়ে যাবে আর পেইন কম হবে।

৩) ওয়্যাক্সিং এর পরে হাতে-পায়ে আইস কিউব রাব করতে পারেন কয়েক সেকেন্ড এর জন্য। এতে স্কিনে সুদিং ফিল পাবেন, ইরিটেশন হওয়ার চান্স থাকবে না।

৪) ড্রাই স্কিনে রেজর ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৫) রেজর ব্লেড এর শার্পনেস না থাকলে স্মুথলি শেভিং করা যায় না, তাই এদিকেও লক্ষ্য রাখুন।

৬) এখন অনেক ব্র্যান্ডের হেয়ার রিমুভাল ক্রিমও পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করতে চাইলে আগে লেবেল পড়ে নিন। দেখে নিন এমন কোনো ইনগ্রেডিয়েন্ট আছে কিনা যা থেকে স্কিনে ইরিটেশন ও ইচিনেস হতে পারে।

রেগুলার সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করুন

হাত পায়ের যত্ন নিতে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না

ফেইসে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হলেও বডিতে অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না। আমাদের হাত ও পায়ের যে অংশ সূর্যের আলোর সরাসরি সংস্পর্শে আসে বলে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে এ এরিয়াগুলোতে খুব দ্রুত ট্যান পড়ে যায় ,কালচে ছোপ নজরে আসে এবং ফেইসের টোনের সাথে বডির স্কিনটোন ম্যাচ করে না। তাই দিনের বেলা অবশ্যই ভালো প্রোটেকশনের একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এবং তিন ঘণ্টা পর পর রিঅ্যাপ্লাই করুন। যদি বাইরে যাওয়ার পর স্কিনে লালচে ভাব কিংবা ইরিটেশন হয়, তাহলে অ্যালোভেরা সুদিং জেল কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে তারপর সেটি স্কিনে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতে স্কিনের ইরিটেশন কমে যাবে। তবে অ্যালোভেরায় অ্যালার্জি থাকলে একটি নরম কাপড়ে বরফ নিয়ে সেটি স্কিনে রাব করলেও উপকার পাবেন।

হাত পায়ের ট্যান কমাবেন কীভাবে?

বডিতে সান ট্যান হলে তা সময়ের সাথে এমনিতেই দূর হয়ে যায়। তবে দ্রুত সান ট্যান দূর করতে চাইলে আপনার প্রতি সপ্তাহে একবার বডিতে এক্সফোলিয়েশন করতে পারেন। এক্সফোলিয়েশনের মাধ্যমে জমে থাকা ডেড স্কিন সেলগুলো রিমুভ হয়ে যায় এবং নতুন সেল জেনারেট হ্তে পারে বলে এটি স্কিনে ট্যানিংয়ের কারণে হওয়া কালচে ভাব ধীরে ধীরে কমাতে সাহায্য করে। আপনারা চাইলে মার্কেটে অ্যাভেইলেবল থাকা ফিজিক্যাল বডি স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন, তবে ফিজিক্যাল স্ক্রাবের ক্ষেত্রে সেটির বিডসগুলো যেন ছোট ও সবগুলো একই আকৃতির হয় তা খেয়াল রাখুন। আবার ল্যাকটিক অ্যাসিড বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরও ব্যবহার করতে পারেন। সেনসিটিভ স্কিন হলে এক্সফোলিয়েট করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়ার পরামর্শ থাকবে।

হাত পায়ের যত্ন

আশা করি বুঝতে পারছেন, হাত পায়ের যত্ন নেওয়া কিন্তু একদমই কঠিন ও সময়সাপেক্ষ নয়। বরং যখন স্কিন কেয়ার ও হেয়ার কেয়ার করবেন, তখনই বডি কেয়ার করে নিতে পারেন। এতে করে ত্বক ও চুলের পাশাপাশি বডির স্কিনও হেলদি রাখা সম্ভব হবে। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার।

অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

লিখেছেনঃ সুমাইয়া রহমান দোলা

ছবিঃ সাটারস্টক, সাজগোজ

The post প্রতিদিনের ব্যস্ততায় হাত পায়ের যত্ন সঠিকভাবে নেওয়া হচ্ছে তো? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/d96vflg
via IFTTT

Post a Comment

Previous Post Next Post